মোকরা ইউনিয়নে ফতেপুর গ্রামে পেটানশাহ নামে ভন্ড পীরের আর্বিভাব

এপ্রিল 21, 2011 - Leave a Response

মোকরা প্রতিনিধি: বিগত চার বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী মোকরা ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামে পেটানশাহ নামে ভন্ড পীরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পীর মুরিদির নামে এখানে চলছে ভন্ডামি। প্রতি বছর চৈত্র মাসে মাহফিল হয়ে থাকে, মজার বিষয় হলো, মাহফিলে ওয়াজ-নসিহত কিছুই হয় না। নামাযও পড়া হয় না। সারা রাত বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে মাহফিলের সমাপ্তি ঘটানো হয়। কোন পোষ্টারিং, মাইকিং হয় না, কিন্তু প্রচুর লোক সমাগম হয়ে থাকে। এ বারের চৈত্র মাসের মাহফিলে মহিষ, গরু, খাসি নিয়ে বাজনা বাজিয়ে গাউছুল আজম পেটানশাহ বলে মিছিল দেয়া হয়। মিছিলটি নাঙ্গলকোট সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মাহফিলে ঢাকা, চট্রগাম, বি-বাড়ীয়া এবং আরো বহু অঞ্চল থেকে বাসে যোগে লোকজন আসে বলে জানা যায়। মাহফিলে মহিষ, গরু ও খাসি মিলে সর্বমোট ৩২টি পশু হাদিয়া হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

মোকরা ইউনিয়নে আরো দু’টি দরবার আছে। মোকরা এবং তিলিপ দরবার। ঐ দুই দরবারের পীরগণও এ ভন্ড পীরের ভন্ডামি কার্যক্রম বন্ধের জন্য কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না। পেটানশাহর কার্যক্রমের ওপর দুই পীর নীরব থাকার কারণ কী? অবস্থা দেখে মনে হয়, পেটানশাহ এক সময় মোকরা ও তিলিপ দবাবারকেও পিছনে ফেলে দেবে। তখন হয়ত দুই দরবারের পীরদের কিছু করার থাকবে না।

এখন মানুষ বলে বেড়াচ্ছে, মোকরা ইউনিয়নে এ পর্যন্ত তিনটি দরবার হল। ভবিষ্যতে আরো কয়টি দরবার হয় কে জানে! জনগণের প্রশ্ন, মোকরা ইউনিয়নে তাহলে কি পীরের কারখানা আছে?

যারা মাহফিলে গিয়েছিলেন তাদেরকে পেটানশাহ’র ভন্ডামি সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে করি না। ধর্মের নামে এ সব ভন্ডামী যত বৃদ্ধি পাবে, মানুষ ধর্ম থেকে তত দূরে সরে যাবে। তাই সচেতন ব্যক্তি মাত্রই উচিত, এ সব ভন্ডদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া এবং এদেরকে প্রতিরোধের সর্বাত্মক চেষ্টা করা।

ফেনীর এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বর্বর কান্ড : এগারো বছরের বালিকার সাথে বিয়ের নামে অনৈতিক কাজ

এপ্রিল 21, 2011 - Leave a Response

undefined ফেনীর একটি মহিলা মাদ্রাসায় আবাসিক ছাত্রী চৈতী (ছদ্ম নাম)। মেয়েটির বয়স মাত্র ১১ বছর। তাকে নিয়ে ফেনী থেকে সুদুর রাজশাহীর দুর্গাপুর পাড়ি জমায় হাফেজ ক্বারী মহিব উল্যাহ (৪০) নামের এক বর্বর মাদ্রাসা শিক্ষক। চার সন্তানের বাবা হাফেজ ক্বারী মহিব উল্যাহ সেখানে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী রূপে তার সাথে বসবাস শুরু করে। বিয়ে কি জিনিস যে মেয়ে সেটিও বুঝে না, সে মেয়েটিকে তিনি কাবিন নামা ছাড়াই বিয়ে করেছেন বলে দাবী করেন। মেয়েটি শহরের পাগলা মিয়া সড়কস্থ একটি আবাসিক মহিলা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে রাজশাহী থেকে হাফেজ ক্বারী মহিব উল্যাকে গ্রেফতার করে মেয়েটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফেনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলামের অফিসে হাফেজ ক্বারী মহিব উল্যাহ ও মেয়েটির সাথে কথা বলে জানা যায়, মহিব উল্যাহ শহরের ডাক্তার পাড়াস্থ আলহেরা ইসলামী একাডেমীর একজন শিক্ষক। সে পাশ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের ধোপাখিলা গ্রামের মাওঃ আঃ কাদেরের ছেলে। লেখা পড়া করেছে শর্শদির একটি খারেজী মাদ্রাসায়। নিজ এলাকায় ১২ বৎসর আগে বিয়ে করেছেন। তার রয়েছে চার সন্তান। ক্বারী মহিব উল্যার সাথে নাবালিকা মেয়েটির বিয়ের ঘটকালী করেন আরেক মাদ্রাসা শিক্ষক মাওঃ মোঃ সোলায়মান। ঘটক মাওঃ সোলায়মানের পরামর্শে ও তার এক বন্ধুর সহযোগীতায় মহিব উল্যাহ রাজশাহীর দুর্গাপুরে একটি নিরাপদ স্থানে বাসা ভাড়া করেন। গত ২৮ মার্চ ২০১১ ক্বারী মহিব উল্যা মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা-মা খোঁজাখোঁজি শুরু করেন। পরে বিষয়টি তারা বুঝতে পারে ও ক্বারী মহিব উল্যাকে আসামী করে ফেনী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেনী থানা পুলিশ রাজশাহীর দুর্গাপুর এলাকা থেকে ক্বারী মহিব উল্যা ও মেয়েটিকে উদ্ধার করে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী থানায় নিয়ে আসে। ফেনী থানায় ক্বারী মহিব উল্যা ও মেয়েটি জানায়, ফেনী পাগলা মিয়া সড়কস্থ খাদিজাতুল ক্বোবরা মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওঃ সোলায়মান তাদের দুইজনকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয়। সেই থেকে মেয়ের বাবা মা’র সাথে আত্বীয়ের মতোই সম্পর্ক গড়ে তোলেন ক্বারী মহিব উল্লা। তবে মেয়েটি তার বিয়ের কথা অস্বীকার করে। সে জানায়, তার বাবাকে ঐদিন সন্ধ্যায় নামাজ পড়তে মসজিদে পাঠিয়ে তাকে বাসে তুলে প্রথমে ঢাকায় ও পরে রাজশাহী নিয়ে যায়। তার বাবাই তাকে ক্বারীর কাছে বিয়ে দিয়েছে বলে ক্বারী তাকে জানায়। ফেনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম তাদেরকে রাজশাহী থেকে উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে ক্বারী মহিব উল্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রিয় পাঠক, এসব ঘটনা আমরা কোন আলেমের কাছ থেকে আশা করি না। এ সব জঘন্য কাজের জন্য সামাজিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

দীর্ঘ নাটকীয়তার পর অবশেষে সম্পন্ন হল মৌকরার বার্ষিক মাহফিল

এপ্রিল 20, 2011 - Leave a Response

বহু চড়াই উৎরাইয়ের পর অবশেষে গত ১২ এপ্রিল ২০১১ মৌকরার বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত হল। ভন্ড পীর নেছারের দাওয়াতে ছারছীনার পীর সাহেব মৌকরাতে মাহফিল করবেন না বলে আলেম সমাজ ও সচেতন মানুষের ধারণা ছিল। শেষ পর্যন্ত সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হল এবং ভন্ড পীর নেছারের দাওয়াতেই ছারছীনার পীর সাহেব মৌকরাতে মাহফিল করলেন। মাহফিলের তারিখ নির্ধারণের পর থেকে মাহফিল শেষ হওয়া পর্যন্ত সবগুলো ঘটনাই ছিল নাটকের মতো করে সাজানো। মৌকরা মাহফিলের ৭ দিন আগ থেকেই রহস্যজনক কারণে ছারছীনার পীর সাহেব নিজের ০১৭১১ ৮২৩০৮৮ মোবাইল নম্বরটি বন্ধ করে রাখেন, যাতে কোন মানুষ অথবা মিডিয়ার মুখোমুখি হতে না হয়। পীর নেছারকে নিয়ে ছারছীনার পীর সাহেবের এত ভয় কেন? পীর নেছার যদি সাধুই হয়, তাহলে তার চরিত্রের ব্যাপারে ছারছীনার পীর সাহেব সরাসরি মাহফিলে জনতাকে ব্যাখ্যা দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সারাদেশ যখন ভন্ড পীর নেছারকে নিয়ে থই থই করছে, তখন ছারছীনার পীর বিভিন্ন ইঙ্গিতে কথা বলেন। মানুষ ইঙ্গিত ঝুঝতে চায় না। সরাসরি বলে দিলেই হয়, পীর নেছারের চরিত্র নিয়ে যে কথা ওঠেছে তা সত্য অথবা মিথ্যা।

গভীর রাতে ছারছীনার পীরের মৌকরাতে যাওয়ার কারণ কী? ১২ এপ্রিল ২০১১ নাঙ্গলকোট উপজেলার ভিতরে থেকেও অনেক রাত করে মৌকরাতে গেলেন ছারছীনার পীর সাহেব। তখন সময়  রাত ১০:১৫ মিনিট। গিয়েই তিনি সরাসরি মঞ্চে বসলেন। কিছু সময় অবস্থানের পর মঞ্চ থেকে নেমে আবার রাতেই ফিরে গেলেন। এ সব কিছু দেখে মানুষের মনে নতুন প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। অন্যান্য বছর মাহফিলে আসলে যে রুমটিতে ছারছীনার পীর সাহেব বিশ্রাম নিতেন, সেই রুমটিতে এবার গেলেন না, এমন কি মৌকরা দরবারে এক গ্লাস পানিও খেলেন না, তারই কারণ কি? তাহলে ছারছীনার পীর সাহেবেকে কোন মহল প্রভাবিত করে মৌকরাতে নিয়ে আসলেন!

১২ এপ্রিল ২০১১ সাংবাদিকের একটি দল ছারছীনা পীর সাহেবের সাক্ষাতকার নেওয়ার জন্য ফোন করে দেখেন, পীর সাহেবের মোবাইল ফোনটি বন্ধ। তারপর পীর সাহেবের জামাতা মাওঃ রুহুল আমিনের নম্বরে ফোন করে পীর সাহেবের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তিনি জানান পীর সাহেব ব্যস্ত আছেন। সাংবাদিকরা জানতে চান, কখন পীর সাহেবের সঙ্গে কথা বলা যাবে। পীর সাহেবের জামাতা জানান, আপনাদেরকে কিছুক্ষণ পর জানাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল এই মোবাইলটিও বন্ধ। কিসের এত ভয় সাংবাদিকের মুখোমুখি হতে? শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, ছারছীনার পীর সাহেব নিজ গাড়ীর বদলে অন্য একটি গাড়ীতে করে মৌকরাতে মাহফিলে গেলেন। ১২ এপ্রিল হিযবুল্লার নেতৃবৃন্দ সবাই মিডিয়ার ভয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে আড়ালে চলে গেলেন। এতে বুঝা যায়, চোরের মনে পুলিশ পুলিশ।

দীর্ঘ দিন পর কামরুন্নাহারের স্বামী মাওঃ কাদেরের মৌকরাতে শুভাগমণ হল। মাওঃ কাদের রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ দিন পর মৌকরা দরবারে আসলেন এবং এক লক্ষ টাকাও দান করলেন। মিডিয়ায় তার স্ত্রী ও মৌকরার পীর নেছারকে নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হল তা কি মাওঃ কাদের শুনেন নাই? শুনে থাকলে মাহফিলে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে এ সব ব্যাপারে একটু ওয়াজ করলে মানুষের ভুল ভাঙতো। ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগানো যায়, কিন্তু ঘুমের ভান করা ব্যক্তিকে জাগানো যায় না। মাওঃ কাদের ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার দুজনেরই মোবাইল নম্বর পরিবর্তণ দেখে আমরা বুঝতে পারি যে, সব কিছুই মাওঃ কাদের অবগত আছেন। তবে কতদিন, কত বার মোবাইল নম্বর পরিবর্তণ করবেন এবং কতক্ষণ নিজ মোবাইল নম্বরটি মিডিয়া থেকে গোপণ রাখবেন তা সময়ই বলে দেবে।

পীর নেছার ও মাওঃ কাদের আসলেই কি দোস্ত? নাকি দুশমন? আমরা কামনা করি, পীর নেছার ও মাওঃ কাদেরের সেই পুরোনো বন্ধুত্ব আবার পুণঃস্থাপিত হোক। কিন্তু আবার যেন কামরুন্নাহারের স্বামী মাওঃ কাদেরের কোন অভিযোগ আমাদের শুনতে না হয়।

ভন্ড পীর নেছারের নাটকের সমাপ্তি কবে হবে দেশবাসী সে অপেক্ষায় আছে, থাকবে।